Flickr Image

মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

ঈদের ছুটি

Be the first to comment!

ঈদের ছুটিতে
হই হুল্লোর করে বাড়ি
আসবো বলে প্ল্যান
করে রেখেছি সবাই।
কলেজ বন্ধ দিলেই দৌড়!
আগের রাতেই ব্যাগপত্র
গুছিয়ে শুনশান।
কলেজ থেকে এসে
আমার বন্ধু তাহিরকে বললাম,
কিরে বাসায় যাবিনা?
না দোস্ত!
ওই বেটা ঈদ কি এখানেই
করবি নাকি?
তাহির চুপ করে আছে,
সবার বাসায় আসার
প্রস্তুতি দেখে আমার বন্ধু
তাহিরের মনটা ভিশন খারাপ।
আমি আবার শার্লক হোমস!
একটু আগ বাড়িয়ে বললাম,
দোস্ত কি হইছে তোর?
তোর জিএফ কে রেখে
যেতে ইচ্ছে করছে না?
তাহির মুখ বন্ধ করে
সবার ব্যাগ গুছা দেখে যাচ্ছে,
তাহিরের সাথে অনেক
ভাল বন্ধুত্ব আমার।
কিন্তু তাহির একটু চাপা স্বভাবের।
নিজের কথা অন্য কাউকে
বলতে নারাজ!
তাহিরকে বললাম,
চল বের হ?
এখানে থেকে কি হবে?
বাসায় গিয়ে ইচ্ছেমত কথা
বলিস তোর জিএফ এর সাথে!!
তাহির এবার মুখ খুললো,
বাসায় গিয়ে কি হবে দোস্ত?
আমাকে এরকম প্রশ্ন
করাতে ঠাস করে বলে দিলাম,,,,,,
বেটা তোর মা বাবা বাড়িতে নেই?
তাদের সাথে ঈদ করবি।
তাহিরের দুচোখ লাল
বর্ণের হয়ে এলো।
কিছু বুঝে উঠার আগেই
হুহু করে কেঁদে উঠলো।
আমাকে জরিয়ে ধরে বললো,,
না রে দোস্ত আমার কেউ নাই!!
কেউ নাই মানে?
তাহির?
কি হইছে তোর একটু খুলে বলতো?
এবার তাহির আমাকে বললো,,
তোরা বাসায় যাবি কত আনন্দ,
বাবা মা ভাই বোন
সবাই একসাথে ঈদ করবি।
আর আমি!!
আমি কি রে?
তাহির বললো,
আমার তো এজগতে কেউ নাইরে,
আমি কার সাথে ঈদ করবো বল?
কেনইবা বাড়ি যাবো?
ভেবেছিলাম তাহির রাগের বসে,
নতুবা মন খারাপ করে এগুলো কথা বলতেছে।
কিন্তু না,
তাহির সব সত্যিই বললো এতখন।
তাহিরের এই দুনিয়াতে কেউ নেই।
বাবা মারা যায় ক্লাস সেভেনে থাকতেই,
মা মারা যায় নাইনে উঠে,
আর একটা বড় বোন ছিলো,
বিয়ের বেশ কিছুদিন পর সেই বড় বোনটাও তাহিরকে ছেড়ে চলে যায়।
নির্মম পৃথিবীর অসহ্য যন্ত্রনার সবটুকু কষ্ট হয়তো তাহিরের বুকে জমা আছে,
কিন্তু তাহির!!
তাহির তবুও একটা মিথ্যে অভিনয় করে চলেছে দিগ্বিদিক সবার সাথে।
কাউকে বুঝতে দেয়নি নিজের যন্ত্রনার কথা।
হয়তো তাহিরের এর আগেও অনেক ঈদ কেটেছে একা একাই!!
তবে এবার!
এবার তো আমার মত বন্ধু আছে,
মাকে ফোন করে সব খুলে বললাম,
মা তাহিরকে ফোন করে বললো আমার সাথে যেতে।
তবে তাহিরের আত্মমর্যাদা আর গ্লানি অনেক শক্ত।
সে বললো,
দোস্ত এটা খুব খারাপ দেখাবে,
তুই বরং মাকে বুঝিয়ে বলিস!
তাহিরকে জোর করার সাহস আমার নেই,
কারণ তাহির অন্যরকম একটা ছেলে।
তবে হ্যাঁ,
তাহিরের মুখে কথা নিলাম,
ঈদের পরে দিন আমাদের বাসায় আসতে।
এটাতে না করতে পারলোনা।
ঈদের পরের দিনের অপেক্ষায় রইলাম আমিও....
ঈদের পরের দিন তাহির আসলো,
অনেক মজা করেছিলাম সেই ঈদে।
পরে তাহিরের একটা চাকরি হয়,
আমার সুবাদেই চাকরিটা হয়,
চাকরি হওয়ার পর আমারই কাজিনকে দিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেই।
তাহির রাজি হলে আমি আমার কাজিনের বাড়িতে বিষয়টা খুলে বলি।
সব ঠিক ঠাক হয়ে গেলো,
বিয়ের পিরিতে বসলো তাহির।
আমাদের সম্পর্কটা এখনো অনেক গভীর।
তাহিরের এখন সবাই আছে,,
একটা মেয়ে বাচ্চা হয়েছে।
দেখতে অনেক সুন্দর।
খুব মিস করছি তাহিরকে,
বন্ধু আয়না এবারের ঈদটাও এভাবেই করি.........।
গ্রুপ:Scientific Harbel limited
  • 0Blogger Comment
  • Facebook Comment

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0

ঈদের ছুটিতে
হই হুল্লোর করে বাড়ি
আসবো বলে প্ল্যান
করে রেখেছি সবাই।
কলেজ বন্ধ দিলেই দৌড়!
আগের রাতেই ব্যাগপত্র
গুছিয়ে শুনশান।
কলেজ থেকে এসে
আমার বন্ধু তাহিরকে বললাম,
কিরে বাসায় যাবিনা?
না দোস্ত!
ওই বেটা ঈদ কি এখানেই
করবি নাকি?
তাহির চুপ করে আছে,
সবার বাসায় আসার
প্রস্তুতি দেখে আমার বন্ধু
তাহিরের মনটা ভিশন খারাপ।
আমি আবার শার্লক হোমস!
একটু আগ বাড়িয়ে বললাম,
দোস্ত কি হইছে তোর?
তোর জিএফ কে রেখে
যেতে ইচ্ছে করছে না?
তাহির মুখ বন্ধ করে
সবার ব্যাগ গুছা দেখে যাচ্ছে,
তাহিরের সাথে অনেক
ভাল বন্ধুত্ব আমার।
কিন্তু তাহির একটু চাপা স্বভাবের।
নিজের কথা অন্য কাউকে
বলতে নারাজ!
তাহিরকে বললাম,
চল বের হ?
এখানে থেকে কি হবে?
বাসায় গিয়ে ইচ্ছেমত কথা
বলিস তোর জিএফ এর সাথে!!
তাহির এবার মুখ খুললো,
বাসায় গিয়ে কি হবে দোস্ত?
আমাকে এরকম প্রশ্ন
করাতে ঠাস করে বলে দিলাম,,,,,,
বেটা তোর মা বাবা বাড়িতে নেই?
তাদের সাথে ঈদ করবি।
তাহিরের দুচোখ লাল
বর্ণের হয়ে এলো।
কিছু বুঝে উঠার আগেই
হুহু করে কেঁদে উঠলো।
আমাকে জরিয়ে ধরে বললো,,
না রে দোস্ত আমার কেউ নাই!!
কেউ নাই মানে?
তাহির?
কি হইছে তোর একটু খুলে বলতো?
এবার তাহির আমাকে বললো,,
তোরা বাসায় যাবি কত আনন্দ,
বাবা মা ভাই বোন
সবাই একসাথে ঈদ করবি।
আর আমি!!
আমি কি রে?
তাহির বললো,
আমার তো এজগতে কেউ নাইরে,
আমি কার সাথে ঈদ করবো বল?
কেনইবা বাড়ি যাবো?
ভেবেছিলাম তাহির রাগের বসে,
নতুবা মন খারাপ করে এগুলো কথা বলতেছে।
কিন্তু না,
তাহির সব সত্যিই বললো এতখন।
তাহিরের এই দুনিয়াতে কেউ নেই।
বাবা মারা যায় ক্লাস সেভেনে থাকতেই,
মা মারা যায় নাইনে উঠে,
আর একটা বড় বোন ছিলো,
বিয়ের বেশ কিছুদিন পর সেই বড় বোনটাও তাহিরকে ছেড়ে চলে যায়।
নির্মম পৃথিবীর অসহ্য যন্ত্রনার সবটুকু কষ্ট হয়তো তাহিরের বুকে জমা আছে,
কিন্তু তাহির!!
তাহির তবুও একটা মিথ্যে অভিনয় করে চলেছে দিগ্বিদিক সবার সাথে।
কাউকে বুঝতে দেয়নি নিজের যন্ত্রনার কথা।
হয়তো তাহিরের এর আগেও অনেক ঈদ কেটেছে একা একাই!!
তবে এবার!
এবার তো আমার মত বন্ধু আছে,
মাকে ফোন করে সব খুলে বললাম,
মা তাহিরকে ফোন করে বললো আমার সাথে যেতে।
তবে তাহিরের আত্মমর্যাদা আর গ্লানি অনেক শক্ত।
সে বললো,
দোস্ত এটা খুব খারাপ দেখাবে,
তুই বরং মাকে বুঝিয়ে বলিস!
তাহিরকে জোর করার সাহস আমার নেই,
কারণ তাহির অন্যরকম একটা ছেলে।
তবে হ্যাঁ,
তাহিরের মুখে কথা নিলাম,
ঈদের পরে দিন আমাদের বাসায় আসতে।
এটাতে না করতে পারলোনা।
ঈদের পরের দিনের অপেক্ষায় রইলাম আমিও....
ঈদের পরের দিন তাহির আসলো,
অনেক মজা করেছিলাম সেই ঈদে।
পরে তাহিরের একটা চাকরি হয়,
আমার সুবাদেই চাকরিটা হয়,
চাকরি হওয়ার পর আমারই কাজিনকে দিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেই।
তাহির রাজি হলে আমি আমার কাজিনের বাড়িতে বিষয়টা খুলে বলি।
সব ঠিক ঠাক হয়ে গেলো,
বিয়ের পিরিতে বসলো তাহির।
আমাদের সম্পর্কটা এখনো অনেক গভীর।
তাহিরের এখন সবাই আছে,,
একটা মেয়ে বাচ্চা হয়েছে।
দেখতে অনেক সুন্দর।
খুব মিস করছি তাহিরকে,
বন্ধু আয়না এবারের ঈদটাও এভাবেই করি.........।
গ্রুপ:Scientific Harbel limited

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Dear readers, after reading the Content please ask for advice and to provide constructive feedback Please Write Relevant Comment with Polite Language.Your comments inspired me to continue blogging. Your opinion much more valuable to me. Thank you.

টপ ভয়েসমেন্ট